Friday, July 14, 2023

দাবা

শুধু কয়েকটা বোড়ে চাই। 
যাদের ভুল বুঝিয়ে,
ভয়, লোভ, বা স্বপ্ন দেখিয়ে, 
যুদ্ধ যুদ্ধ খেলতে পাঠানো যায়।
অস্ত্রের কোনও অভাব নেই
অস্পৃশ্যতা, ঘৃণা, হিংস্রতা,
অসহিষ্ণুতা, ধর্মান্ধতা, শঠতা
উস্কানি-মন্ত্রপূত অমোঘ অস্ত্র সব।
রাজার জয়যাত্রা যেন বাধা না পায় 
বাধা পেলে মারো, নয়তো মরো
উপযুক্ত অস্ত্র প্রয়োগ করো 
এগিয়ে যাও বোড়ে, বুক চিতিয়ে লড়ো। 
পেছানোর তো কোনও নিয়ম নেই। 
রাজা থাকে নিরাপত্তায় মোড়া 
মন্ত্রী সান্ত্রি ঘেরা
নৌকা-সওয়ার কিংবা হাতি, ঘোড়া।
মুখোমুখি হও বোড়ে সব ঝড় ঝাপটার 
উল্টোদিকের ধেয়ে আসা সব অস্ত্রের
জেনো, এই যুদ্ধে বোড়েদের মরা দস্তুর 
রাজারা শুধু জেতে কিংবা হারে।

Saturday, June 03, 2023

কুস্তি













মাথাটা উঁচিয়ে লড়ে যাও যোদ্ধা,
পদক তোমার নয়তো অর্থহীন;
প্রতিপক্ষকে ছেড়োনা লড়াই-মঞ্চ,
যুঝে নিতে হবে দম্ভী-ক্ষমতাসীন।

কুস্তি এখনো অনেক পর্ব বাকি,
দাঁতে দাঁত চেপে সয়ে নাও অপমান,
খেলার শেষে জয় জেনো নিশ্চিত;
নাস্তানাবুদ হবেই ক্ষমতাবান।

সৈরিন্ধ্রির মানহানির প্রয়াসে,
ক্ষমতামত্ত কীচক মরলো পিষে; 
করাল কালিয় পরাজয় মেনেছিল, 
যমুনার জল কলুষিত করে বিষে।

ক্ষমতা যতই রক্তচক্ষু দেখাক,
শেষকথা বলে ন্যায়ের পথের পথিক;
চোখের পলকে বিপক্ষ ধরাশায়ী; 
ঠাণ্ডা মাথায় প্যাঁচের প্রয়োগে সঠিক।

ভরসা রাখো গণদেবতার রায়ে;
যার অনাদর করে আজ রক্ষক;
গণদেবতাই দর্শক এই কুস্তির;
গণদেবতাই চূড়ান্ত বিচারক।।

Friday, December 30, 2022

ফুটবল সম্রাট















এক যে ছিল জগৎসেরা নিকষ কালো মোতি।

লক্ষ তারা হার মেনে যায় এমনি যে তার জ্যোতি!!


ফুটবলেতে পা ছোঁয়ালেই লাগ ভেলকি লাগ!

সব পেরিয়ে গোল না দিয়ে মানতো না সে বাগ।


ছোট থেকেই হাজার বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে পার। 

আশা জাগায়, ভরসা যোগায় সবাইকে দুনিয়ার!


কোথায় গেলে, সোনার ছেলে ক্বচিৎ এমন মেলে?

ফুটবলেতে যাদু দেখায় খেলার রাজা পেলে!!

Sunday, April 19, 2020

ঘরবন্দি




















সকল কাজকর্ম বন্ধ করে ঘরে,
ঘরবন্দির নিয়ম মেনে চলি,
কুণ্ঠা নিয়ে টিভিতে চোখ রাখি,
প্রতিদিন বাড়ে মহামারির বলি।

যাদের পান্তা ফুরায় আনতে গিয়ে নুন,
শ্রমিক, মজুর, ছোট ব্যবসায়ী, চাষী;
এই ভারতের বুকে, তাদের নিয়ে
উন্নয়ন কম, রাজনীতি হয় বেশি।

এমন ঘরবন্দি মানুষ কয়েক কোটি
শুধু ভগবানই ভরসা যাদের কাছে;
মাস দুয়েকের রেশন টুকু ছাড়া
এই সংকটে কিইবা তাদের আছে!

ওষুধ, সাবান, মুখোশ, শিশুর দুধ
কিনতে গেলে চাই যে কিছু টাকা,
বদলে পায় তারকার উপদেশ
আর রাজনীতির প্রতিশ্রুতি ফাঁকা।

ভিড় করে কেনে নেতা, তারকাও ধনী
জমানো অর্থে ছুটি কাটানোর জাঁক!
শখের রান্না, শখের বাগান নিয়ে
ফেসবুক, টিভি সবেতে লাগায় তাক!

পরিবার ছেড়ে, অনাহারে থেকে যারা
ঘাম ও রক্তে দেশের ভিত্তি গড়ে,
সুখী মানুষের সাজানো বিলাস দেখে,
শক্ত চোয়ালে জীবন যুদ্ধ লড়ে।

শ্রমজীবী শুষে, গরিবকে পিষে যদি
আঁটো দেশ বানানোর নিষ্ফল যত ফন্দি,
জেনো কখনোই এগোবেনা এই দেশ
চিরকাল সবে থেকে যাবো ঘরবন্দি।।

Tuesday, April 14, 2020

নতুন মানুষ








নতুন আরেকটি বছর এসে দাঁড়াল,
নতুন শপথে সবাই হাত বাড়াল;
দিন বদলের, পালা বদলের কথা।
অনেকদিনের চলে আসা এই প্রথা।

মৃত্যুর ভয়ে, আহ্লাদে রাশ টানি।
মৃত্যুর ভয়ে, নিয়ম কানুন মানি।
কাল থেকে সেই পুনর্মূষিক ভব,
আগের মতোই সব বেহিসেবি হব।
বাঁধন হারা উল্লাসে যাবো ভেসে;
করালগ্রাসী এই মহামারি শেষে।

মানুষ যখনই হয়েছে বেলাগাম,
ধ্বংস করেছে সুন্দর ধরাধাম।
উচিৎ শিক্ষা পেয়েছে হাতেনাতে,
রুখেছে প্রকৃতি কঠিন প্রত্যাঘাতে।

তবু দেখি, ওই মূর্খ মানুষ আজ
সকল জীবের স্বাধীনতা করে চুরি।
নষ্ট করছে প্রকৃতির সব সাজ
শ্মশানে বানায় আত্মশ্লাঘার পুরী।

নতুন বছর! জ্ঞানের শিখা জ্বালো,
সাম্যের চেয়ে কিছুই তো নয় বড়ো;
সকলের তরে আলো-হাওয়া-মাটি-জল,
মানুষকে তুমি নতুন করে গড়ো।

Friday, December 06, 2019

উত্তরণ

সঠিক শিক্ষা পায়নি যে - নরপশু সে তো বর্বর!
হিংস্র লোলুপ শ্বাপদের মত ছিঁড়ে খায় নারী কলেবর।

গল্পে যদি বা রাবণ মরে, দুযোধন হারে যুদ্ধে!
সমাজে তাদের পোয়াবারো, তারা সব আইনের ঊর্ধে।

প্রশাসন চলে শ্লথের গতিতে, পুলিশ পাকায় ঘোঁট,
উকিল খোঁজে আইনের ফাঁক, পকেটে ভরতে নোট।

শাস্তি কতটা হবে - তা নিয়ে চিন্তা কিংবা ভয়?
সমাজে দোষী'র প্রভাব কতটা - তাই করে নির্ণয়।

নির্যাতিতারই সাজা শুরু হয়, ট্যারা বাঁকা কত কথা!
পুরুষের দোষ লঘু করে দ্যাখে সমাজের যত মাথা।

সমাজ কখনও দেয়নি নারীকে যথাযথ সম্মান!
ঘটে যায় তাই পাঞ্চালী আর সীতার আখ্যান।

কোন অধিকারে নিরূপণ করে পুরুষ শাসিত সমাজ,
নারীর আচার, পোশাক, শোভা, চলন, স্বভাব, কাজ?

কী'কাজ করবে, কখন ফিরবে, কেইবা বন্ধু হবে!
পুরুষ নারীর ভিন্ন ভিন্ন মাপকাঠি কেন রবে?

কখনও যদি নির্যাতনের বলি হয় আত্মজা,
পরিজন চায় অত্যাচারীর ভীষণ কঠোর সাজা।

তারাই আবার বেসুরো গায় পুত্ৰ অসুর হলে;
ভদ্র, নম্র, হীরের টুকরো, ফেঁসেছে কপট ছলে।

নিগূঢ় আঁধারে ডুবছে সমাজ, কিভাবে উত্তরণ?
ভাবনা চিন্তা সচেতন কর, মার্জিত কর মন।

নারী-সম্মান লুন্ঠিত হলে প্রতিবাদ কর জোরে।
যেই হোক দোষী বাঁধা পড়ে যেন যথাযথ সাজাডোরে 

ঠিক ঠিক ভাবে দাও হে শিক্ষা নিজের সন্তানেরে
পুরুষ নারীতে তফাৎ যে নাই, সম্মানে, অধিকারে।

কখনই যেন ভুলেও না ভাবে নারীরা ভোগ্যপণ্য,
দেখতে পেয়েছে পৃথিবীর আলো এক রমণীর জন্য!

Sunday, October 27, 2019

আলাদিনের প্রদীপ

আলাদিন তোর প্রদীপ খানি দিবি?
কাজ ফুরোলেই ফেরত দেব তোরে,
কাজের তরে শহরে গেছে বাবা,
ফেরে যেন দীপালিকার ভোরে।

গায়ে আমার পুরোনো এই জামা,
রংচটা আর অনেক খানি ছেঁড়া,
সবার তরে নতুন পোষাক কিনে,
প্রদীপের জোরে ডিঙোতাম সব বেড়া।

মা'র ভাঁড়ারে বাড়ন্ত যে চাল,
কাল সারাদিন হয়নি ঘরে ভাত,
তোর থেকে ওই প্রদীপ খানি পেলে,
ভরপেট খেয়ে ঘুমোতাম সারা রাত।

দিদি আমার এখনও ফ্রক পরে,
খুব শিগগিরই যাবে শ্বশুরবাড়ী!
থাকলে তোর ওই প্রদীপ আমার কাছে,
পারতো না যেতে এত তাড়াতাড়ি।

ঠাম্মী কত গল্প শোনায় মোরে!
রোজ নিয়ে যায় পক্ষীরাজের দেশে!
বাতের ব্যথায় কাহিল সে যে খুব,
প্রদীপ পেলে সারতো এক নিমেষে।

ছোট্ট মোদের মাটির কুঁড়েঘর,
বর্ষাকালে চাল থেকে জল পড়ে,
থাকতো যদি প্রদীপ আমার কাছে,
অট্টালিকা নিতাম আমি গড়ে।

পথ ঘাট সব বৃষ্টিতে হয় কাদা,
বার হওয়া যে মানা বাড়ির থেকে,
জাদু কার্পেটে চেপে যেতাম উড়ে,
প্রদীপের ওই দত্যি টাকে ডেকে।

প্রদীপটাকে পেতাম যদি হাতে
চাঁদের বুড়ি আসতো আমার বাড়ি
সূর্য তারা-র আলোর পথ ধরে
তার সাথে যে দিতাম চাঁদে পাড়ি

আলাদিন তুই থাকনা আমার সাথে,
আমার ঘরে সারা-জীবন ধরে,
দুজনে মিলে জগৎটাকে গড়ি,
রূপকথার এক স্বর্গ, মাটির 'পরে!